ঢাকার ধামরাইয়ে যৌন সংখ্যালঘু সমকামী সম্প্রদায়ের এক শিক্ষককে ছাত্রদের সাথে সমকামিতার অভিযোগে কলেজ থেকে বিতারনের অপচেষ্টার ঘটনায় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
একই সাথে উক্ত ঘটনা দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক জড়িত অপরাধীকে বিচারে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোড় দাবী জানিয়েছে জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ ।
গত ০২ নভেম্বর ২০২২ খ্রীষ্টাব্দ তারিখে অনলাইন পত্রিকা রাইজিং বিডি ডট কম এ প্রকাশিত খবর আনুযায়ী জানা যায় ঢাকার ধামরাইয়ে ভালুম আতাউর রহমান খান ডিগ্রি কলেজের ভূগোল বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে সমকামীতার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ৩০ শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ করেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজটির গভর্নিং বডির সভাপতি হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য গ্রহণ শেষে গত ৩ আক্টোবরকলেজের আরেক প্রভাষক তদন্ত কমিটির প্রধান হাবিবুর রহমান হাবিব প্রতিবেদন জমা দেন।
প্রভাষক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘তদন্তে যা পেয়েছি সেটা তো ভাষায় প্রকাশ করা করা যায় না। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ২০ দিন আগে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি।’
এ প্রসঙ্গে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাইন উদ্দিন বলেন, ‘ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ করেছে ইউএনও’র কাছে। ফলে এ বিষয়ে সেই সিদ্ধান্ত নেবে। আমার কাছে তো অভিযোগ করে নাই। তাছাড়া ইউএনও স্যার তো ব্যবস্থা নেবেই। এক সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত দেবে।’
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এটি প্রক্রিয়াধীন। শীঘ্রই আপনারা ফলাফল জানতে পারবেন।’
জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ও সমকামী অধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম সৈকত শুধুমাত্র যৌন প্রবৃত্তিগত সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে একজন শিক্ষককে কলেজ থেকে বিতারণের অপচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
পাশাপাশি শুধুমাত্র যৌন সংখ্যালঘু সমকামী হওয়ায় ছাত্রদের প্ররোচিত করে উল্লেখিত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার ঘটনা লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য মূলক এবং জাতিসংঘ ঘোষিত মৌলিক মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন বলেই অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সৈকত মনে করতেন।
তিনি আরো বলেন, ১৪ বছর আগে সমকামীতার অভিযোগে গত আগষ্ট মাসে শিক্ষার্থীদের উস্কানি দিয়ে মিছিল মিটিং ও ক্লাস বর্জনের মাধ্যমে সাভার মডেল কলেজের ইসলামী শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক রমজান আলীকে ক্লাস নেওয়া হতে বিরত থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
তাছাড়া, গত মে মাসে বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির ফার্সেসি বিভাগের শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ছাত্রদের সমকামিতার প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অ্যাডভোকেট শাহনূর ইসলাম সৈকত মনে করেন উল্লেখিত ঘটনাগুলো বাংলাদেশে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়,বরং সারা বাংলাদেশে যৌন প্রবৃত্তিগত সমকামী সংখ্যালঘুর উপর সংঘটিত বৈষম্য, হত্যা, আঘাত ও মানবাধিকার লংঘন বিষয়ের একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র।
সারা বাংলাদেশে পরিবার থেকে সমাজ এবং সমাজ থেকে রাষ্ট্র সর্বত্র যৌন প্রবৃত্তিগত সমকামী সম্প্রদায়ের ব্যক্তির প্রতিনিয়ত বৈষম্যসহ বিভিন্ন ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হলেও সেসবের অধিকাংশ সামাজিক অগ্রহণযোগ্যতা ও অসহিষ্ণুতার কারণে জনসম্মুখের অগোচরে রয়ে যাচ্ছে বলে অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম সৈকত মনে করেন।
============================================================
Advocate Shahanur Islam | An Young, Ascendant, Dedicated Human Rights Defender, Lawyer and Blogger in Bangladesh, Fighting for Ensuring Human Rights, Rule of Law, Good Governance, Peace and Social Justice For the Victim of Torture, Extra Judicial Killing, Force Disappearance, Trafficking in Persons including Ethnic, Religious, Sexual and Social Minority People.
No comments:
Post a Comment