ট্রান্সজেন্ডার বিন্দু ও মিম জীবনের বহু প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ সফল উদ্যোক্তা। নিজেদের দক্ষতা আর একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায় সমাজে আজ তারা প্রতিষ্ঠিত।
জীবন থেকে পাওয়া শিক্ষা থেকে এবার অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন বিউটিশিয়ান বিন্দু ও মিম। জানিয়েছেন, সুবিধাবঞ্চিত নারীদের তারা বিনা মূল্যে দেবেন বিউটিশিয়ান হওয়ার প্রশিক্ষণ।
নরসিংদীর মাধবদীতে বিন্দু ও মিমের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান- ‘ত্রিনয়ন রূপশিল্প’-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে এ ঘোষণা দেন তারা।
মাধবদী পৌর এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে অর্ধশতাধিক নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে কেক কেটে উদযাপন করেন সাফল্যের এক বছর।
মাধবদী থানা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের প্রচেষ্টায় নরসিংদীর তৎকালীন প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাছলিমা আক্তার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ আলম মিয়ার সার্বিক সহযোগিতায় গত বছরের জানুয়ারিতে এই পার্লারটি গড়ে ওঠে।
মূলত ট্রান্সজেন্ডারদের জীবনমান উন্নয়নে কর্মমুখী প্রকল্পে তাদের অন্তর্ভুক্তি করার অংশ হিসেবে এ কাজটি করেন তারা।
মাধবদী পৌর শহরের বড় মসজিদ রোডে অবস্থিত ইসলাম প্লাজার বিউটি পার্লারটি অল্প সময়ে সুনাম কুড়িয়েছে ব্যাপক।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেয়া বক্তব্যে আপ্লুত কণ্ঠে বিন্দু বলেন, ‘ট্রান্সজেন্ডার হয়েও সমাজের প্রতিবন্ধকতা পাশ কাটিতে পরিবার নিয়ে এখন সুখে আছি। এই সুযোগ করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সুবিধাবঞ্চিত নারীদের এখন থেকে বিনা মূল্যে বিউটিশিয়ান হওয়ার প্রশিক্ষণ দেব।’
ত্রিনয়ন রূপশিল্পের নিয়মিত গ্রাহক এবি ব্যাংক মাধবদী শাখার ব্যবস্থাপক সুমি আক্তার। তিনি বলেন, ‘মাধবদী থেকে এখন আর রাজধানীতে যেতে হচ্ছে না। এখানে রাজধানীর মতো রূপচর্চার সেবা পাচ্ছি। এটা আমাদের মতো নারী উদ্যোক্তাদের গর্ব ও অহংকার।’
মাধবদী থানা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আল-আমিন বলেন, ‘দেশে অনেক অবহেলিত মানুষ আছেন। বিত্তবানরা তাদের পাশে দাঁড়ালে মিম ও বিন্দুর মতো অনেকের জীবন পাল্টে যাবে।’
যেভাবে হলো বিন্দু-মিমের পুনর্বাসন
ট্রান্সজেন্ডার রত্না শেখ ওরফে বিন্দুর বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। আর মিম আক্তারের বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার কিসমত বানিয়াদী গ্রামে।
প্রায় ১১ বছর আগে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বাড়ি ছেড়ে দেন মিম। পরে কিছুদিন ঢাকায় অবস্থানের পর অবৈধ পথে ভারতে চলে যান তিনি। সেখানে পরিচয় হয় মুন্সিগঞ্জের রত্না ওরফে বিন্দুর সঙ্গে। এরপর সেখানে রূপচর্চার প্রশিক্ষণ নিয়ে ফেরেন দেশে।
বিন্দুকে নিয়ে নিজ বাড়ি নরসিংদীতে আসেন মিম। তবে এতে সামাজিক প্রতিবন্ধকতা আরও বেড়ে যায়। বাধ্য হয়ে আবারও বাড়ি ছাড়া হন তারা। ট্রান্সজেন্ডার অনেকের মতো বাড়ি বাড়ি ঘুরে টাকা সংগ্রহ শুরু করেন তারা।
সমাজ বিষয়টিকে ভালোভাবে নিতে পারেনি। এক রাতে মিমের বাড়ি ঘেরাও করেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে তাদের।
তাদের এই অসহায়ত্ব দেখে এগিয়ে আসেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। তাদের প্রচেষ্টায় বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। এগিয়ে আসেন তারাও। উদ্যোগ নেন তাদের পুনর্বাসনের।
জেলা প্রশাসনের অর্থায়ন আর সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে শহরের কেন্দ্রে একটি বিউটি পার্লার গড়ে তোলা হয় মিম ও বিন্দুর জন্য।
যেভাবে পাল্টে গেলেন মিম ও বিন্দু============================================================ Advocate Shahanur Islam | An Young, Ascendant, Dedicated Human Rights Defender, Lawyer and Blogger in Bangladesh, Fighting for Ensuring Human Rights, Rule of Law, Good Governance, Peace and Social Justice For the Victim of Torture, Extra Judicial Killing, Force Disappearance, Trafficking in Persons including Ethnic, Religious, Sexual and Social Minority People.
No comments:
Post a Comment