এক মাসে দুটি হত্যাকান্ড হয়। একটি গাজীপুরের কাশিমপুরে, অপরটি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে গিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জানতে পারে, দুই হত্যাকান্ডের নেপথ্যেই ছিল সমকামিতা। গত ২১ জুলাই রাত ১১টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরে সারদাগঞ্জ মাদ্রাসার পাশে সিরাজুল ইসলামের বাড়ির পঞ্চমতলার ফ্ল্যাট থেকে হাত-মুখ বাঁধা অবস্থায় আশেকুল হক ওরফে শরীফ নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পোশাককর্মী আশেকুল জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া গ্রামের মৃত আবদুল হামিদের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আনোয়ারুল হক আজাদ ২২ জুলাই কাশিমপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
ছায়া তদন্তে নেমে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে তৌহিদুল ইসলাম রাজু ওরফে বাবু (২৩), মুমিনুল ইসলাম ওরফে মমিনকে (২৭) গত ২৫ জুলাই সকালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কানপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এ সময় তাদের কাছ থেকে শরীফে মোবাইলফোন, এলইডি টিভি, হাত ঘড়িসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়। পরে তাদের অপর সহযোগী আবদুল মান্নান নামে আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২৬ জুলাই মমিনুল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মমিনের স্বীকারোক্তির সূত্র ধরে পিবিআই জানায়, ঘটনার দিন বাবু আর মমিন রাত ৯টার দিকে শরীফের বাসায় যায়। সেখানে রান্নাবান্না করে। খাওয়া দাওয়া শেষে তারা লুডু খেলে। এরপর সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। রাত প্রায় ৩টার দিকে শরীফ মমিনের পরনের প্যান্ট খুলে ফেলে। আরেকজন মমিনের পা ধরে রাখে। এ সময় মমিন চিৎকার করলে বাবু ঘুম থেকে জেগে যায়। শরীফ ছাড়া অন্যরা পালিয়ে যায়। শরীফ উলঙ্গ অবস্থায় তাদের চুপ থাকতে বলে। এ সময় শরীফ অনেক জোরাজোরি করলে তাকে তারা ধাক্কা দেয়। এতে শরীফ খাটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে যায়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মমিন শরীফের পা চেপে ধরে। আর বাবু প্রথমে শরীফের হাত-পা এবং পরে মুখ গেঞ্জি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর গামছা দিয়ে গলায় প্যাঁচ দিয়ে দুজন দুদিক দিয়ে টান দিলে শরীফ অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে মান্নানের কাছ থেকে জানতে পারে- শরীফ মারা গেছে। পিবিআইর গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ প্রতিবেদককে জানান, সমকামিতার জেরে পোশাককর্মী শরীফকে হত্যা করেছিল তার বন্ধুরা। শরীফ ও গ্রেফতার হওয়া তার তিন বন্ধু সবাই সমকামিতায় আসক্ত। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও শরীফের কাছে ছিল। এদিকে সমকামিতা ও আর্থিক লেনদেন নিয়ে মনমালিন্যের জেরে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে গত ২৫ জুন এমদাদুল হক মিঠুকে হত্যা করা হয়। পরদিন দাউদকান্দির স্বল্প পেন্নাই দীঘিরপাড় এলাকায় কবিরের মাছের প্রজেক্টের উত্তর পাড়ে মিঠুর লাশ পাওয়া যায়। মিঠু উপজেলার গৌরীপুরে ‘দেশ হসপিটাল’ নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান ছিলেন। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার হাড় পাকনা গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় দাউদকান্দি থানায় একটি মামলা হয়। ঘটনার পর থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই। ২৬ জুলাই রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইমরানকে গ্রেফতার করে পিবিআই কুমিল্লা জেলার একটি দল। জানা যায়, ওইদিনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ইমরান। পিবিআই সূত্র জানায়, স্বীকারোক্তিতে ইমরান জানান- মিঠু তার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। এ বছরের জানুয়ারিতে ইমরান মিঠুর কর্মস্থল গৌরীপুরে আসেন এবং মিঠুর রুমে উঠেন। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই সেখানে একজন অজ্ঞাত পুরুষ, মিঠুর বোন ও দুজন মহিলা তাকে মারধর করে। পরে ইমরান ঢাকায় চলে আসেন। এরপর মিঠু তাকে প্রতিদিন কল দিতেন। ইমরান ধার নেওয়া টাকা দ্রুত ফেরত দিতে বলেন মিঠুকে। ঘটনার দিন সকালে মিঠু ফোন দিয়ে ইমরানকে তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসতে বলেন। সন্ধ্যার আগে গৌরীপুর পৌঁছে তিনি মিঠুকে ফোন দেন। মিঠু তাকে তার হাসপাতালের পিছনে আসতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর মিঠু তার সঙ্গে কথা আছে বলে ইমরানকে পাশের একটি ঝোপের দিকে নিয়ে যান। সেখানে তার প্যান্ট খুলতে চাইলে ইমরান বাধা দেন। মিঠু ছুরি বের করে তাকে ভয় দেখান। এ সময় দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। বাঁচার জন্য মিঠুকে আঘাত করেন ইমরান। পিবিআই কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, তদন্তকালে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ইমরানকে শনাক্ত করা হয়। উভয়ই সমকামী ছিলেন বলে তারা জানতে পেরেছেন
============================================================ Advocate Shahanur Islam | An Young, Ascendant, Dedicated Human Rights Defender, Lawyer and Blogger in Bangladesh, Fighting for Ensuring Human Rights, Rule of Law, Good Governance, Peace and Social Justice For the Victim of Torture, Extra Judicial Killing, Force Disappearance, Trafficking in Persons including Ethnic, Religious, Sexual and Social Minority People.
No comments:
Post a Comment