অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সৈকত: বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ছিল জাতীয় মানবাধিকার
কমিশন প্রতিষ্ঠার।সেই স্বপ্ন পুরুন আন্দোলনও ছিল লাগাতার।সাধারণ মানুষের আকাঙ্খা ছিল বাংলাদেশ
একটা শক্তিশালী, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থাকবে, যে কমিশন সকল্ প্রকার
অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বুক উচিয়ে সামনে
এগিয়ে আসবে এবং প্রতিকার বিধান করবে। দেশের মানুষের এই আশা আকাঙ্খার সাথে আন্তার্জাতিক সম্প্রদায়ও একাত্মতা পোষন করে। ফলশ্রুতিতে, ২০০৭ সালের ২৩ শে ডিসেম্বর তৎকালীন তত্বাবধায়ক সরকার জাতীয় মানবাধিকার অধ্যাদেশ ২০০৭ জারী করে এবং এই অধ্যাদেশের অধীনে ১ সেপ্টেম্বর ২০০৮ সালে আপিল বিভাগে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আমিরুল কবীরের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয়।
এগিয়ে আসবে এবং প্রতিকার বিধান করবে। দেশের মানুষের এই আশা আকাঙ্খার সাথে আন্তার্জাতিক সম্প্রদায়ও একাত্মতা পোষন করে। ফলশ্রুতিতে, ২০০৭ সালের ২৩ শে ডিসেম্বর তৎকালীন তত্বাবধায়ক সরকার জাতীয় মানবাধিকার অধ্যাদেশ ২০০৭ জারী করে এবং এই অধ্যাদেশের অধীনে ১ সেপ্টেম্বর ২০০৮ সালে আপিল বিভাগে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আমিরুল কবীরের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয়।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৭ সালের অধ্যাদেশ বাতিল
করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ প্রণয়ন করে। আইনটিকে ১ সেপ্টেম্বর ২০০৮ সাল থেকে
ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দেওয়ার ফলে পূর্বে গঠিত মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রম বৈধতা
পায়।
বাংলাদেশের মানুষের আজন্ম লালিত স্বপ্ন জাতীয় মানবাধিকার
কমিশন গঠিত হওয়ার পর প্রায় ৫ বাছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সামগ্রিক মানবাধিকারের ক্ষেত্রে
হয়ত দু একটি পদক্ষেপ কমিশনেকে নিতে দেখা গেছে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানবাধিকার
রক্ষায় কমিশনের যে ভূমিকা প্রত্যাশিত ছিল সেক্ষেত্রে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে।
বিচারপতি কৃষ্ণা আয়ার বলেছিলেন, মানবাধিকারের কাজ তারাই
করতে পারে, অন্যের দুঃখে যাদের চোখে জল আসে। অন্যের দুঃখে যদি কান্না না আসে তবে তুমি
মানবাধিকার কর্মী হওয়ার যোগ্য নও। এই হিসেবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান
একজন যোগ্য মানবাধিকার কর্মী।
কিন্তু এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে শুধু চোখের জল কাম্য
নয়। যাদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠিত হলো তারা আর কান্না দেখতে
চান না, তারা চান মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকার রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করুন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইনের ১২ ধারায় কমিশনের ক্ষমতা ও
কার্যাবলী সম্পর্কে বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি, রাষ্ট্রীয় বা
সরকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান অথবা জনসেবক কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে ক্ষতিগ্রস্থ
ব্যক্তির আবেদনের ভিত্তিতে অথবা কমিশন নিজ উদ্যোগে ঘটনাটির তদন্ত করতে পারে।
কারাগার, সংশোধনাগার, হেফাজত, চিকিৎসা বা ভিন্নরূপ কল্যাণের
জন্য মানুষকে আটক রাখা হয় এমন যে কোন স্থান কমিশন পরিদর্শন করতে পারবে এবং এসব উন্নয়নের
জন্য সরকারকে সুপারিশ করবে।
বাংলাদেশে প্রচলিত আইনগুলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের
সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা পরীক্ষা করা, মানবাধিকার সম্পর্কে গবেষনা করা এবং সচেতনতা
বৃদ্ধির লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করাও কমিশনের উল্লেখযোগ্য কাজ। কোন ঘটনা তদন্তের জন্য
কমিশন প্রয়োজন মনে করলে সাক্ষীকে সমন দিতে পারে এবং যে কোন নথি তলব করতে পারে।
কিন্তু প্রশ্ন হল গত তিন বছরে কমিশন কতটি ঘটনা তদন্ত করেছে
এবং সেগুলোর ফলাফল কি? যে দু একটি জেলখানা বা হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে, তার ভিত্তিতে
কোন সুপারিশ কি সরকারের নিকট উত্থাপন করেছে? কোন আইন সংশোধনের জন্য সরকারকে সুপারিশ
করেছে?
এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কমিশন হয়ত বলবে তাদের লোকবল
নেই,সরকার সহযোগীতা করছে না, হাত পা বেঁধে পানিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, ইত্যাদি। এসব অজুহাত
হয়ত কিছুটা সত্য, কিন্তু কাজ করার ইচ্ছে থাকাটাও জরুরী।কমিশনের ইচ্ছে থাকলে সীমিত পরিসরে
হলেও কাজগুলোকে এগিয়ে নেওয়া যেত।
আরেকটি বিষয় প্রাসঙ্গিকভাবেই চলে আসে, সেটা হল কমিশনের মিডিয়া
প্রীতি। কমিশন কি করছে জনগণের তা জানার আগ্রহ আছে। কিন্তু টিভি খুললেই কমিশনের চেয়ারম্যানকে
দেখা যাবে তা কমিশনের জন্যও শোভন নয়। বরং কমিশনের কজন মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট থাকতে পারেন,
যিনি সময় সময় কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করবেন।
সেই সাথে কমিশনেকে ঢেলে সাজানোর সময় এসেছে। একজন সার্বক্ষণিক
সদস্য এবং একজন চেয়ারম্যানের ফলে সবকিছু সময় মত করা কঠিন। সেজন্য আইন সংশোধন করে হলেও
সার্বক্ষণিক সদস্য সংখ্যা বাড়ানো উচিত এবং সদস্য হিসেবে এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে
হবে যাদের মানবাধিকার ক্ষেত্রে কাজ করার দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
লেখক:মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী ও কলামিস্ট; প্রতিষ্ঠাতামহাসচিব, জাস্টিসমেকার্স
বাংলাদেশ; মোবাইলঃ ০১৭২০৩০৮০৮০, ইমেল: saikotbihr@gmail.com, ব্লগ:
www.shahanur.blogspot.com
নিবন্ধটি নিম্নোক্ত নিউজ মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে:
১। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন:শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, প্রয়োজন কার্যকর পদক্ষেপ, BanglaNews24.Com, December 14, 2012
২। মানবাধিকার কমিশনে এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে যাদের মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে, BdLawNews.Com, December 31, 2012
৩। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন! UnitedNews24.Com, March 12, 2013
৪। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন! Gorai24.Com, March 12, 2013
৫। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন, BanglaNews.Com.Bd, March 12, 2013
৬। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন, ParisVisionNews.Com, March 12, 2013
৭। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন, NewsBlogBd.Com, March 12, 2013
৮। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন, PrimeNewsBd24.Com, March 12, 2013
৯। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন, OpenNews24.Com, March 12, 2013
১০। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন, Bangla.Se, March 12, 2013
১১। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন, 52Somachar.com, March 12, 2013
১২। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন!Bd24Live.Com, March 13, 2013
১৩। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন!Bangla-News24.Com, March 13, 2013
১৪। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন! MZamin.Com, March 13, 2013
১৫। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন!EkusheyNews24.Com, March 13, 2013
১৬। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন!TimesiBengali.Com, March 13, 2013
১৭। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন!DailySangram.Com, March 13, 2013
১৮। শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, চাই কার্যকর কমিশন! Bangla-News24.Com, March 13, 2013
======================================================================
Personal site of Advocate Shahanur Islam (an young, ascendant and promising human rights defender and lawyer) working for ensuring human rights, rule of law and social justice in Bangladesh and the Globe. কপিরাইট © অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সৈকত. সকল সত্ব ® সংরক্ষিত. শাহানূর ডট ব্লগস্পট ডট কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোন নিবন্ধ, মতামত, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, ভিডিও চিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ব্যতীত ব্যবহার আইনগত দণ্ডনীয়.