বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই নারী। প্রচলিত জাতীয় আয়
(জিডিপি) পরিমাপের ক্ষেত্রে পুরুষের উৎপাদনশীলতার যেখানে প্রায় ৯৮ শতাংশ
হিসেবে ধরা হয়, সেখানে নারীর উৎপাদনশীলতার মাত্র ৪৭ শতাংশ গণনা করা হয়।
গৃহস্থালী কাজ প্রায় এককভাবে নারীরা সম্পন্ন করে থাকে। কিন্তু কোথাও
গৃহস্থালী কাজকে অর্থনৈতিক কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। তাই আমাদের
জাতীয় অর্থনীতি থেকে নারীর এই অদৃশ্য বিপুল অবদান হারিয়ে যায়,যা পরিমাপ
করা হয় না।
উৎপাদনশীল পরিমণ্ডলে নারীকে সবসময় অনুৎপাদনশীল এবং কেবল
ভোগকারী হিসেবে মনে করা হয় বলেই তাদের এই অবস্থা। অথচ নারী সমানভাবে
ভোগকারী এবং উৎপাদনকারী। গৃহকর্মের স্বীকৃতি হীনতা জনসংখ্যার অর্ধেক অংশ
হিসেবে নারীকে বেকার ও নিস্ক্রিয়রূপে চিত্রিত করেছে। এ কারনে দেশের ১০
থেকে ৬৪ বছর বয়স্ক কর্মম নারী জনসংখ্যার ৯৫ শতাংশকে গৃহবধু বা ঘরনী নামে
আখ্যায়িত করে তাদের রাষ্ট্রের মোট শ্রমশক্তি থেকে বহিস্কৃত রাখা হয়েছে।
এখনো বিভিন্ন পরিসংখ্যানে নারীর অর্থনৈতিক অবদানের তেমন কোন স্বীকৃতি নেই।
এসব পরিসংখ্যানে নারীর কর্মঘন্টা পুরুষের চেয়ে কম দেখানো হয়। যদিও নারীরা
সারানই কোন না কোন কাজে ব্যস্ত থাকেন। যেহেতু বহু ক্ষেত্রেই তাদের কাজের
অর্থায়ন হয না,তাই তাদের কর্মঘন্টাও কম ধরা হয়। আমাদের দেশে সার্বিকভাবেই
নারীর অবদানকে অস্বীকার করা হয়। গ্রামীন নারীদের ক্ষেত্রে এই প্রবনতা আরো
বেশী। তারা দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করলেও তাদের অবদান দেশের অর্থনৈতিক হিসাব
বা পরিসংখ্যানে লিপিবদ্ধ হয় না। সামর্থের সবটুকু নিংড়ে দিয়েও তারা
তাদের এই অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিটুকু পায় না। এটা অত্যান্ত পরিতাপের
বিষয়।
সূত্র: অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত ও শ্রমজীবী মানুষ,পার্টনারশিপ অব উইমেন ইন একশন।
No comments:
Post a Comment